সব রেকর্ড ভেঙে ২৪ ঘণ্টার কম সময়ে ঘূর্ণন সম্পন্ন করল পৃথিবী

পৃথিবী সারাক্ষণ সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। সে কারণেই হচ্ছে দিন-রাত। সেই দিন বা রাত ছোট কিংবা বড় হওয়ার ব্যাপারে এখানে আলোচনা হচ্ছে না। বরং পুরো একটা দিন অর্থাৎ পৃথিবী নিজের কক্ষপথে একবার ঘুরে আসতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে।

সেই ২৪ ঘণ্টাকে আমরা এক দিন বুঝি। সম্প্রতি ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে পৃথিবী নিজের কক্ষপথে একবার প্রদক্ষিণ করেছে। এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১.৫৯ মিলিসেকেন্ড কম নিয়ে একবার ঘূর্ণন সম্পন্ন করেছে পৃথিবী।

পৃথিবী যে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে নিজের কক্ষপথে একবার ঘূর্ণন সম্পন্ন করে সবচেয়ে ছোট দিনের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে, তা মহাকাশ বিজ্ঞানে আলোড়ন ফেলে দেওয়ার মতোই বিষয়।

পৃথিবী ২৪ সেকেন্ডের আগে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছে। পৃথিবী যদি এভাবে ক্রমবর্ধমান হারে ঘুরতে থাকে, তবে তা নেতিবাচক লিপ সেকেন্ডের প্রবর্তনের দিকে নিয়ে যাবে বিশ্বকে।

মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গত ২৯ জুলাই পৃথিবী ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে কক্ষপথে একবার প্রদক্ষিণ করে আসতে সম্ভবপর হয়েছে। ২৯ জুলাই পৃথিবীর ২৪ ঘণ্টার থেকে ১.৫৯ মিলিসেকেন্ড কম সময়ে একবার প্রদক্ষিণ করা সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে সবচেয়ে ছোট দিনের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবী সম্প্রতি তার গতি বাড়িয়েছে। ২০২০ সালে পৃথিবী সবচেয়ে ছোট দিন দেখেছিল। ১৯৬০ সাল থেকে রেকর্ড করা তথ্য অনুসারে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই ছোট দিন পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল। ওই দিন ২৪ ঘণ্টার থেকে ১.৪৭ মিলিসেকেন্ড কম সময়ে নিজের কক্ষপথে একবার প্রদক্ষিণ করেছিল পৃথিবী।

পৃথিবীর প্রদক্ষিণের গতি যখন এমন বেড়ে যায়, তখন পরের বছরও গ্রহটি সাধারণত বর্ধিত হারে ঘুরতে থাকে। কিন্তু এটি কোনো রেকর্ড ভাঙতে পারেনি। মহাকাশবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ছোট দিনের ৫০ বছরের পর্যায় এবার শুরু হতে পারে। কিন্তু কেন এমনটা হয়? পৃথিবীর ঘূর্ণনের ভিন্ন গতির কারণ এখনো অজানা।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবীর এই ভিন্ন ঘূর্ণন গতি হতে পারে অভ্যন্তরীণ কারণে। আবার হতে পারে বাইরের স্তরের কারণেও। আবার মহাসাগরের জোয়ার-ভাটা কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

তারা এটাও বলছেন, পৃথিবীর উপরিভাগ চ্যান্ডলার ওয়াবল নামে পরিচিত। ওই জায়গা থেকেই গতি পেতে শুরু করে পৃথিবী। সেখানকার কোনো কারণেও গতি দ্রুত হতে পারে। আবার কখনো ধীরগতিও হতে পারে।

পৃথিবী যদি ক্রমবর্ধমানে হারে ঘুরতে ঘুরতে লিপ সেকেন্ডের প্রবর্তন করে তাহলে পারমাণবিক ঘড়ির পরিমাপের সঙ্গে সমাঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে প্রভাব ফেলবে। তাহলে লিপ সেকেন্ড স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

এই লিপ সেকেন্ড ভালোর থেকে বেশি ক্ষতি করতে পারে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এটি সময়ের সফটওয়্যারের ওপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে একটি নেতাবাচক লিপ সেকেন্ড যোগ করতে হতে পার। যাকে বলে ড্রপ সেকেন্ড।

সূত্র : এনডিটিভি